[তাবলীগ জামায়ায়ের ভ্রান্ত আক্বীদা ও তার জবাব।]
ফাজায়েল সাদাকাত, ২য় খণ্ড, ২৮০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
🔜আবু আলি রোদবারি (রঃ) বলেন, ঈদের দিন একজন ফকির আসিয়া আমাকে বলিল যে এখানে কি কোন পরিস্কার জায়গা যেখানে একজন ফকির মরিতে পারে?
🔜আমি ইহা বাজে কথা মনে করিয়া বলিলাম, ভিতরে এসে যেখানে এসে মর। সে ভিতরে আসিয়া ওযু করিয়া দুই রাকাত নামাজ পড়িল ও মারা গেল।
🔜আমি তাহার কাফন দাফনের ব্যবস্থা করার পরে দেখিবার জন্য কাফন হটাইয়া দেখিতেই সে চোখ খুলিয়া ফেলিল। আমি তাকে বলিলাম, মৃত্যুর পরেও জীবন? সে বলিল আমি জীবিত ও আল্লাহর প্রত্যেক আশেকই জীবিত থাকেন।
আমি তোমায় কাল কিয়ামতে স্বীয় প্রতিপত্তিতে সাহায্য করিব”।
৷৷৷৷৷৷৷ এখানে লক্ষণীয়-।।।।।।
১. ফকির আগে থেকেই তার মৃত্যুর খবর জেনে সে তার মৃত্যুর জায়গা নিজে নিজেই ঠিক করল।
২. সে মারা যাওয়ার পরেও একজন জীবিত মানুষ তাকে তাকে কিছু জিজ্ঞাস করল ও সে শুনল।
৩. কথা শুনার পর সে তার উত্তরও দিল।
এখন দেখা যাক কুরআন কি বলে-
আল্লাহ বলেন, কেউ জানেনা আগামীকাল সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানেনা
কোন স্থানে সে মৃত্যুবরন করবে
[সূরা লুকমানঃ ৩৪]
এই আয়াতের ব্যখায় নবী (সঃ) বলেন, “এগুলো গায়িবের কথা এবং এগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা।
(সহিহ বুখারি)
কুরআন আমাদের শিক্ষা দেয়, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেনা সে কোথায় মারা যাবে। আর তাবলীগরা শিক্ষা দেয় ফকির বুজুর্গরা জানতে পারে তারা কোথায় মারা যাবে !!!
🔚আল্লাহ বলেন মৃতকে তুমি [নবী] কথা শুনাতে পারবেনা।
[সুরা নামল আয়াত ৮৪]
[প্রিয় পাঠক এখন আপনারাই বলেন তাহলে কিভাবে ঐ ব্যাক্তি মৃতকে ফকিরকে প্রশ্ন করলো এবং সে শুনলো।]
তাহলে আপনেই বলেন আপনে কুরআনের কথা মানবেন নাকি তাবলীগের এই মন গড়া ভ্রান্ত কাহীনি মানবেন।
🔚শুধু তাই নয়, আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন জীবিত ও মৃত কখনো সমান না।
[সুরা আল ফাতির আয়াত ২২]
অর্থাৎ, কিন্তু গল্পে জীবিত ও মৃত- উভয়েই কথা বলছে অর্থাৎ উভয়েই সমান।
[শুধু একটি ঘটনা না, আরও অসংখ্য এমন আজগুবি অনেক কিচ্ছা রয়েছে তাবলীগি ভাইদের একমাত্র পঠিত বইগুলোতে]
এখন দেখতে পাচ্ছি-
১. তাবলীগ ও তাদের আমলের বই এক কথা বলছে।
২. কোরআন হাদিস তার ভিন্ন আর এক কথা বলছে।
যেহেতু দুটো বিপরীত কথা, তাহলে এখানে যেকেউ একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। যেহেতু, কোরআন ও রাসুল (সঃ) কখনো মিথ্যা বলতে পারেনা, সেহেতু যে গল্পটি বলেছে সে অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আর যে বইয়ে মিথ্যাবাদীদের দ্বারা তৈরি আজগুবি গল্প, কিচ্ছা কাহিনী দিয়ে ভরা সে বই অনুযায়ী আমল করতেই কি রাসুল (সঃ) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন? বরং রাসুল বলেছেন, “নেতা, উপনেতা বা দাম্ভিক ধোঁকাবাজ লোক ছাড়া আর কেউ কিচ্ছা কাহিনী বর্ণনা করেনা”।
[আবু দাউদঃ ৩৬২৪]
শায়েখ আবুল খায়ের বলেন, একবার মদীনা মোনাওয়ারায় হাজির হইয়া পাঁচ দিন পর্যন্ত আমাকে উপবাস থাকতে হয়। খাওয়ার জন্য কিছুই না পেয়ে অবশেষে আমি হুজুর এবং শায়ইখানের কবরের মধ্যে সালাম পড়িয়া আরজ করলাম, হে আল্লাহর রাসুল। আমি আজ রাতে আপনার মেহমান হবো।
এই কথা আরজ করে মিম্বর শরীফের নিকট গিয়ে আমি শুইয়া পড়লাম। স্বপ্নে দেখি, হুজুরে পাক (সাঃ) তাশরীফ এনেছেন। ডানে হযরত আবু বকর, বাম দিকে হজরত ওমর এবং সামনে হজরত আলী রাঃ। হযরত আলী রাঃ আমাকে ডেকে বলেন, এই দেখ, হুজুর সাঃ তাশরীফ এনেছেন। আমি উঠা মাত্রই মহানবী সাঃ আমাকে একটা রুটি দিলেন, আমি অর্ধেক খেয়ে ফেলি।
তারপর যখন আমার চোখ খুলিল তখন আমার হাতে বাকী অর্ধেক ছিল (রুটি অবশিষ্টাংশ)।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৬ পৃষ্ঠা।
সম্মানিত মুসলিম ভাইগণ!
> আল্লাহকে ছেড়ে মৃতু্র পর নবীর মাজারে গিয়ে খাদ্যের প্রার্থনা করা স্পষ্ট শিরক নয় কি?
> মৃতুর পর নবী কবরে থেকেও খাওয়াতে পারেন এ আক্বিদাহ পোষন করা শিরক নয় কি?
> এই রকম শিরকী আকিদাহ কি মানুষকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়, নাকি জাহান্নামের দিকে?
অথচ মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেন,
ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। (সূরা হুদ-৬)
এখান থেকেই সূফীদের শিরকি আক্বিদাহ
“””কেউ ফেরে না খালি হাতে, খাজা বাবার দরবার হতে”” টাইপের গান শুরু হইছে।
নবীর রওজায় যদি গিয়ে রুটি পাওয়া যায়। তবে ওলী আউলিয়ার মাজারে কেন চুইংগাম পাওয়া যাবে না। এই কাহিনী নিশ্চিত নিশ্চিত ভাবে মানুষকে শিরক ও মাজার মুখি করার শিক্ষা দেয়।
বিখ্যাত সূফী (?) ও বুজুর্গ হজরত শায়খ আহমদ রেফয়ী (রঃ) ৫৫৫ হিজরী সনে হজ্জ সমাপন করিয়া নবীজির রওজা জিয়ারতের জন্য মদিনায় হাজির হন। সেখানে তিনি নিম্নোক্ত রওজার সামনে দাঁড়াইয়া নিম্নোক্ত দুটি বয়াত পড়েন।
“দূরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রুহকে হুজুর সাঃ এর খেদমতে পাঠাইয়া দিতাম। সে (রুহ) আমার নায়েব হইয়া আস্তানা শরীফে চুম্বন করিত। আজ আমি শ্বশরীরে দরবারে হাজির হইয়াছি। কাজেই হুজুর আপন হস্ত বাড়াইয়া দেন যেন আমির ঠোট উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করে।
বয়াত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে (??) কবর হইতে হাত মোবারক বাহির হইয়া আসে এবং হযরত রেফায়ী উহাকে চুম্বন করিয়া তৃপ্তি হাসিল করেন।
বলা হয় যে, সে সময় মসজিদে নববীতে ৯০ হাজার লোকের সমাগম ছিল।
সকলেই বিদু্তের মতো হাত মোবারকের চমক দেখিতে পায়। তাহাদের মধ্যে মাহবুবে ছোবহানী আব্দুল কাদের জিলানীও ছিলেন।
[সূত্র: ফাজায়েলে হজ্জ-২৫৮ পৃষ্ঠা ২৩তম নবী প্রেমের কাহিনী।]
ওহে তাবলীগ প্রেমী আল্লাহর বান্দারা, চিন্তা কর। জ্ঞান খাটাও।
আমার কথায় না, আল্লাহর কথায় যা সূরা যুমার এর ১৮ নং আয়াত এ।
আজও মসজিদে নববীতে ৯০ হাজার লোক ধারণ করে না। আর ৯০ হাজার লোক যদি থেকেই থাকে তাহলে কিভাবে ৯০ হাজার মানুষ এট এ টাইম এই হাতের ঝলকানি দেখতে পায়?
> এই ফালতু মার্কা কাহিনীই কি তোমরা বিশ্বাস কর?
> এই সব জিনিসেরই কি তোমরা তাবলীগ করো?
নবীজি সাঃ কখনো আবু বকর(রাঃ) ওমর(রাঃ), ওসমান(রাঃ), আলী (রাঃ) এর জন্য হাত বাড়ালেন না।
কখনো নবী পরবর্তী এত যুদ্ধ হাঙ্গামার সময় হাত বাড়ালেন না। আর কোন জায়গার কোন রেফায়ীর জন্য কবর থেকে হাত বাড়ান। এই সব গাজাখুরী কাহিনীই কি তোমাদের তাবলীগের বিষয়?
>আর ৯০ হাজার মানুষের কথা বইলা মানুষের মাথায় এই কাহিনীটাকে সত্য হিসেবে স্থান দিতে চেষ্টা করা হইছে যে ৯০ হাজার লোক যেখানে হাত দেখতে সেটা ভূল হইতে পারে না।
> এবং আব্দুল কাদের জিলানী রহঃ এর নাম দিয়া কাহিনীটারে আরো পাকাপোক্ত করা হইছে।
> আবার দেখেন রুহকে ইমেইলের মতো সেন্ড করে, প্রতিবারই নবীজি সাঃ কবর থেকে চুমা দেন।
এই সব কাহিনী একমাত্র সূফীদেরই হয়ে থাকে যেমন দেওয়ানবাগীর ১৯৯৮ সালের সম্মেলনে নাকি স্বয়ং আল্লাহ ও রাসূল সাঃ দেওয়ান শরীফে এসেছেন।
নাউজুবিল্লাহ।
বুখারীর প্রথমে দিকের সহীহ হাদিস> যে নবীর নামে মিথ্যারোপ করে সে জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।
কত বড় গাজাখুরী কাহিনীতে ভরা এই ফাজায়েলে হজ্জ্ব। কলমের কালি শেষ হইয়া যাইবো ফাজায়েলে আমলের কাহিনী কাটা শুরু করলে।
🔜আল্লামা কাস্তালানী (রঃ) বলেন, আমি একবার এমন কঠিন রোগে আক্রান্ত হই যে, ডাক্তারগণ পর্যন্ত নিরাশ হইয়া যায়। অবশেষে আমি মক্কা শরীফ অবস্থানকালে হুজুর সাঃ এর উছিলায় দোয়া করিলাম।
রাত্রি বেলায় আমি স্বপ্নে দেখি এক ব্যক্তির হাতে একটি কাগজের টুকরা তাহাতে লেখা রহিয়াছে, ইহা আহমাদ বিন কাস্তালানীর জন্য ওষুধ। হুজুরে পাক [সাঃ]এর তরফ থেকে তাহার নির্দেশে ইহা দান করা হইয়াছে। আমি ঘুম হইতে জাগ্রত হইয়া দেখি আমার মধ্যে রোগের কোন চিহ্ন নাই।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৫ পৃষ্ঠা [৬ নং কাহিনী]
হে আমার বিরোধীতাকারীরা, এ জাতীয় আক্বীদা বা বিশ্বাস যা শায়খ তুলে ধরেছেন এবং ছড়িয়ে দিয়েছেন মসজিদে মসজিদে তা কি কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী না।
অনেকে আমাকে বলছে, দেখান কই আছে কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন কিছূ। আমি তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে চাই, কোরআন ও হাদিসের শিক্ষা হলো মানুষ অসুস্থ হলে আরোগ্যের জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে।
> নবীগণও অসুস্থ হলে আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতেন। কোন নবী অসুস্থ হলে অন্য নবীর ওয়াসীলায় অথবা মাজারে গিয়ে প্রার্থনা করেছেন মর্মে কোন দলিল পাওয়া যায় না।
> মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম আঃ অসুস্থ হলে কি করেছিলেন আল্লাহ তায়ালা তা কুরআনে বর্ণনা করেন।
আমি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন আল্লাহই আমাকে আরোগ্য দান করেন। [আশ শুয়ারা-৮০]
🔚জনৈক বেদুঈন হুজুর [সাঃ] এর কবর শরীফের নিকট দাড়াইয়া আরজ করিল,
হে রব। তুমি গোলাম আজাদ করার হুকুম করেছো। ইনি [নবী সাঃ] তোমার মাহবুব, আমি তোমার গোলাম।
🔜আপন মাহবুবের কবরের উপর আমি গোলামকে [জাহান্নামের] আগুন হইতে আজাদ করিয়া দাও। গায়েব হইতে আওয়াজ আসিল, তুমি একা নিজের জন্য কেন আজাদী (ক্ষমা) চাহিলে? সমস্ত মানুষের জন্য কেন আজাদী চাহিলে না। আমি তোমাকে আগুন হইতে আজাদ করিয়া দিলাম।
(সূত্র: ফাজায়েলে হজ্জ্ব-২৫৪ পৃষ্টার ১ম কাহিনী)
সম্মানিত জ্ঞানী মুসলিম ভাইগণ, রাসুলের মৃতু্র পর তার মাজারে গিয়ে প্রার্থনা করা মাজারপূজারীদের সাদৃশ্য নয় কি?
গায়েবী আওয়াজ শুনা তো নবুওয়াতের কাজ। ঐ বেদুঈন কি নবী ছিল যে গায়েবী আওয়াজ এলো ” আমি তোমাদের আগুন থেকে আজাদ করিয়া দিলাম”।
ভাবতে অবাক লাগে শাইখুল হাদিসের মত একজন স্বনামধন্য আলিম এ জাতীয় ইসলাম বিরোধী আক্বিদাহ বিশ্বাস কিভাবে ছড়াতে চেয়েছেন তাবলীগী নিসাবের মাধ্যমে।
কোরআন থেকে আমরা জানতে পারি আল্লাহ শুধু মাত্র মুসা আঃ এর সাথে দুনিয়ায় জীবনে কথা বলতেন।
এবং অন্য আয়াতে আছে মানুষের এমন কোন যোগ্যতা নাই যে সে আল্লাহর সাথে কথা বলবে। কিন্তু তাবলীগি নিসাব পড়লে বুঝা যায় আল্লাহ গায়েবীভাবে মানুষের সাথেও কথা বলেন।
আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি না আল্লাহ নবীর পরে আমাদের সাথে কথা বলবেন। এই আক্বিদাহ একমাত্র দেওয়ানবাগী, সুরেশ্বরী, চরমোনাই এর পীরগণ ও সূফীবাদিরাই রাখতে পারেন। কারণ তাদের হজ্জ করা লাগে না। কাবা এবং স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুল তাদের বাসায় আসেন। নাউজুবিল্লাহ।
এই সব পীরপন্থী গ্রন্থ ও পীরদের ইসলাম আর নবী মোহাম্মদ সাঃ এর ইসলাম কখনোই এক নয়, কখনো ছিলও না।
শায়েখ ইব্রাহিম এবনে শায়বান (রঃ) বলেন, আমি হজ্বের পর মদিনা পাকে পৌছাইয়া কবর শরীফে হাজির হইয়া হুজুর পাক সাঃ এর খেদমতে ছালাম আরজ করিলাম। উত্তরে হুজরা শরীফ হইতে ওয়ালাইকুমুস্সালাম শুনিতে পাই।
সূত্রঃ ফাজায়েলে হজ্ব-পৃষ্ঠা-২৫৫ (৫ নং কাহিনী)
ও আল্লাহর বান্দারা চিন্তা কর, নবীজি [সাঃ] কবর থেকেও সালামের উত্তর দেন। এই সব আক্বিদার তাবলীগ করতে কে তোমাদের নির্দেশ দিছে? এই কাহিনী দিয়া এটাই বুঝাইতে চায় যে ইব্রাহিম এবনে শায়বান আল্লাহর অলী ছিল।
তাকে তোমরা পাওনি। তিনি পরকালে চলে গেছেন। অতএব এখন তোমাদের সামনে যারা আছে অর্থ্যাত পীরগণ তাহাদের খেদমত কর। তাদের পুজা কর, সিজদা কর, ইবাদাতের না, সম্মানের সিজদাহ।
নাউজুবিল্লাহ
[প্রিয় পাঠক এখন দেখুন বিশ্ব বরেন্য সকল আলেম তাবলীগ জামায়াতকে সরাসরি কুরআন হাদিস বিরুদী বলেছে।]
বিশ্ব বরেণ্য আলিমগণের দৃষ্টিতে তাবলীগ জামা’আত ও তার নিসাব :
🔚আল্লাহ পাক শারী’আতের বিভিন্ন বিষয়ে এ সমস্ত আলিমদের অভিমত গ্রহণ করার জন্য আল কোরআনে বলেন,
তোমরা জ্ঞানবানদের জিজ্ঞেসা কর, যদি তোমরা তা না জান ।
[সূরা আম্বিয়া, ৭]
০১। শাইখ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম আল শাইখ (রহঃ)- সাবেক গ্রান্ড মুফতী, সৌদী আরব তাঁর রাজকীয় তথ্য মন্ত্রনালয়ের প্রধানকে লেখা পত্রে তাবলীগ জামা’আত সম্পর্কে বলেন,
আমি মহোদয়ের নিকট এ প্রতিবেদন পেশ করছি যে, এই জামা’আতের কোনই ফায়দা নেই, এটি একটি বিদ’আতী এবং গোমরা সংগঠন ।
তাদের নিসাব গ্রন্থ পড়ে দেখলাম, তাতে গোমরাহী এবং বিদ’আত ভরপুর ।
[যা আপনাদের সামনে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে]
🔜এতে কবর পূঁজা এবং শিরকের দিকে আহ্বান করা হয়েছে । বিষয়টি এমনই যে, এ ব্যাপারে চুপ থাকা যায় না। এজন্য অবশ্যই আল্লাহ চাহেন তো আমি এর প্রতিবাদ লিপি পাঠাব যেন এর বিভ্রান্তি ও বাতিল প্রকাশ হয়ে পড়ে। আল্লাহর নিকট দু’আ করি তিনি যেন, তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করেন এবং কালিমাকে সুউচ্চে রাখেন- আমীন !
তারিখঃ ২৯/০১/১৩৮২ হিঃ [তথ্য সূত্রঃ ফতওয়া ও চিঠিপত্র, শাইখ মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আলে শাইখ, খন্ড ১ পৃঃ ২৬৭-২৬৮]
০২। শাইখ আবদুল আযীয বিন বায [রহঃ] ‘র নিকট তাবলীগ জামা’আত এর সঙ্গে চিল্লায় বের হওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি বলেন,
🔚আল্লাহর নামে শুরু করছি এবং সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর জন্য । অতঃপর তাবলীগ জামা’আতের নিকট আক্বীদাহর ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ধারণা নেই ।
সুতরাং তাদের সাথে বের হওয়া উচিত নয় একমাত্র যার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’তের আক্বীদা সম্পর্কে জ্ঞান ও স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে সে বের হতে পারে। এজন্য যে তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দিতে এবং প্রয়োজনীয় নাসীহাত করতে পারে এবং তাদেরকে কল্যাণমূলক কাজে সহায়তা করতে পারে । কেননা, তারা তাদের কাজের ব্যাপারে খুবই তৎপর । কিন্তু তারা আরো অধিক জ্ঞানের মুখাপেক্ষী এবং আলিম-উলাময়ে কিরামের প্রতি মুখাপেক্ষী, যারা তাদেরকে তাওহীদ ও সুন্নাহর জ্ঞানে আলোকিত করবে ।
আল্লাহ তা’আলা সকলকে দ্বীনের জ্ঞান দান করুন এবং এর উপর সাবেত রাখুন ।আমীন!
[মাযমু ফাতাওয়া আল শাইখ ইবন বায, ৮/৩৩১]
০৩/ শাইখ সালিহ আল ফাওযান বলেন,
আল্লাহর জন্যে বের হওয়া বলতে তারা যে ধরণের বের হওয়াকে বুঝে থাকে আসলে তা নয় ।
আল্লাহর জন্যে বের হওয়া বা আল্লাহর রাস্তা বলতে বোঝায় জিহাদের জন্যে বের হওয়াকে । তারা বের হওয়ার জন্যে যেভাবে আহবান করে থাকে তা একটি বিদ’আত যা সালাফদের থেকে বর্ণিত নেই, অর্থাৎ সালাফদের কেউ এভাবে বের হওয়ার জন্যে আহবান করেন নি ।
আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকার জন্যে বের হওয়াকে কয়েকটি দিনের মাঝে সীমাবদ্ধ করা যায় না, বরং একজন মানুষ তার সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে লোকদের আল্লাহর দিকে আহবান করবে, তার এই সামর্থ্যকে সে কোন নির্দিষ্ট কিছু দিন যেমন চল্লিশ দিন বা এর কিছু বেশি বা কম অথবা কোন দলের মাঝে সীমাবদ্ধ করবে না ।
অনুরূপভাবে, একজন দায়ীর অবশ্যই ইলম থাকতে হবে । একজন লোকের অনুমতি নেই সে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করবে অথচ যে একজন অজ্ঞ মূর্খ বা জাহেল ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, “(হে নবী,এদের) তুমি বলে দাও, এ হচ্ছে আমার পথ; আমি মানুষদের আল্লাহর দিকে আহবান করি; আমি ও আমার অনুসারীরা পূর্ণাংগ সচেতনতার সাথেই আহবান জানাই; আল্লাহ তায়ালা মহান, পবিত্র এবং আমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই” । [সূরা ইউসুফ ১০৮]
০৪। শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ)’র নিকট প্রশ্ন করা হয়ঃ
তাবলীগ জামা’আত সম্পর্কে আপনার অভিমত কি ? এদের সাথে কোন তালিমে ‘ইলম বা অন্য কেউ আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে বের হতে পারে কি ?
উত্তরে তিনি বলেন, তাবলীগ জামা’আত আল্লাহর কুরআন এবং রসূলের হাদীসের তরীকার উপর প্রতিষ্ঠিত নয় এবং আমাদের সলফে সালিহীনদের পন্থার উপর নয় । অবস্থা যখন এই, তখন তাদের সাথে বের হওয়া জায়িয হবে না । কেননা এটা আমাদের সালফে সালিহীনদের তাবলীগের পন্থার পরিপন্থী ।
[ইমারতী ফতওয়া, আলবানী, পৃঃ ৩৮]
এই সবের ব্যাক্ষা কি কোন তাবলীগ ভাই দিবেন। না, তাদের নিজেদের কাছেও এসবের কোন ব্যখা নেই।
একটা বইয়ে যদি এত কুরআন হাদিস বিরুদী কাহিনী থাকে,তাহলে মুসলিমরা এগোবে কি করে। তাবলীজ ও ইজতেমার মাঠে যে কাহীনি বর্নিত হয় তা সম্পর্কে উৎসাহ যাগাই সাধারন মানুষদের কাছে তাবলীজ জামায়ের এই দুটি বই ফাজায়েল হজ্জ্ব ও ফাজায়েল সাদাকা।
এই বইয়ের কাহিনি গুলো সরাসরি কুরআন হাদিস বিরুদী। ফাজায়েল হজ্জ্বে বলা হচ্ছে ইজতের মাঠে একরাত নামাজ পরলে আরাফাত মাঠের চাইতে ৫০ গুন সওয়াব বেশি নাউজুবিল্লাহ। যা সরাসরি সহি হাদিস বিরুদী কথা।
যদি ইসলাম বিষয়ে একটা বইয়ে এতটাই কোরআন এর বিপরীত বানোয়াট ও নতুন কিছু থাকে, তাহলে মুসলমানদের জন্য একটাই করনীয় যথেষ্ট সেই বইকে আর অনুসরন না করা।
দেখা যাবে অনেকে আবেগের বশে মুলবিষয় ভিন্ন দুনিয়ার আরও অন্যান্য কিছু নিয়ে এসে তর্ক শুরু করবে, অথচ তারা আমার এই মুল বিষয়ের কোন উত্তর দিবেনা।
যারা তর্ক করতে চান, তারা অন্যান্য তর্ক বাদ দিয়ে কোরআন ও হাদিস দিয়ে প্রমাণ করুন, ফাজায়েল আমলের গল্প সঠিক।
একজন মুসলমান হিসেবে ইসলামের পক্ষ থেকে তাবলীগদের কাছে এটা চ্যালেঞ্জ করা হল।
কপিরাইট:
[রাজু আল জাজীয়া]
Comments